কলেজ শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে রাঙামাটিতে হোটেল মালিক সালাউদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ। সালাউদ্দিন রাঙামাটি শহরের কসমস ইন্টারন্যাশনাল নামক আবাসিক হোটেলের মালিক।
সোমবার রাতে তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ঘটনাটি শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, তার হোটেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে যৌন হয়রানি করেন সালাউদ্দিন। ২৫ মে তিনি মেয়েটিকে তার কসমস হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করতে বলেন। এ সময় কয়েক দিন কাজ দেখে মেয়েটির বেতন নির্ধারণ করার কথা জানিয়ে দেন; কিন্তু ওই দিনই মেয়েটিকে তার সঙ্গে খারাপ প্রস্তাব দেন সালাউদ্দিন। পরে তিনি মেয়েটিকে মাসে ৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা বললে এতে অস্বীকৃতি জানান মেয়েটি।
এ সময় সালাউদ্দিন মেয়েটিকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে তাকে খুশি করলে আরও ৫ হাজার টাকা বেশি দেওয়ার কথা জানান; কিন্তু এটা সম্ভব নয় বলে প্রত্যাখ্যান করেন মেয়েটি। এ সময় সব কথাবার্তা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করেন ভুক্তভোগী। পরে তার বন্ধুদের জানালে তারা সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা চালান; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ২০ লাখ টাকা খরচ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন সালাউদ্দিন।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। এতে তাৎক্ষণিক তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় রাতেই সালাউদ্দিনকে আটক করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. সাহেদ উদ্দিন জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আসামি সালাউদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার বিকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সালাউদ্দিনের যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় চলছে। সালাউদ্দিন এর আগেও একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে চাকরি দেওয়ার নামে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সালাউদ্দিনের রাঙামাটি শহরে কসমস আবাসিক হোটেল ছাড়াও মায়ের দোয়া নার্সারি রয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়সংলগ্ন জেলা প্রশাসনের জায়গা লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই মায়ের দোয়া নার্সারি ব্যবসা পরিচালনা করছেন তিনি; কিন্তু এরই মধ্যে অল্প সময়ে হঠাৎ বিশাল সম্পদ ও অর্থবৈভবের মালিক বনে গেছেন সালাউদ্দিন।
Leave a Reply