কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত.
বাংলাদেশ হেল্থ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার ০৮জুলাই কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে সকাল ০৮ঘটিকা থেকে ১১টা পর্যন্ত জেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সুপারিশকৃত প্রস্তাবিত ০৬দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬৪জেলায় সকল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে একযোগে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলায়ও জেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য ও কক্সবাজার জেলা সভাপতি এম.এনামুল হক এনাম, কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির উদ্দিন। বক্তব্যে স্বাস্থ্য সহকারী নেতৃবৃন্দ বলেন মানব শিশুর জন্মের পর থেকে ১০টি মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করার জন্য টিকা আমরা স্বাস্থ্য সহকারীরাই দিয়ে থাকি। আমাদের টিকা প্রদানের কাজ সম্পূর্ণ ট্যাকনিক্যাল হলেও আমরা টেকনিক্যাল পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে আমরা টেকনিক্যাল মর্যাদা ও বেতন আপগ্রেডেশন এর দাবি করে আসলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিয়েও আমাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন না করায় সরকারের অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের তুলনায় আমরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ বলেন স্বাস্থ্য সহকারীদের কাজের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও সরকার অনেক আন্তর্জাতিক পুরুস্কার অর্জন করলেও বিগত সরকার আমাদের শুধু আশার বাণীই দিয়ে গেছেন। আমাদের বেতন গ্রেডের কোন পরিবর্তন হয়নি। চরম এই বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক (বিজ্ঞান) সংযুক্ত করে ১৪তম গ্রডে প্রদান করতে হবে ও ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল মর্যাদা সহ বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরন সহ প্রস্তাবিত ৬দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা এই কর্মসূচি পালন করছি। গত ০১.০৬.২৫ইং থেকে অনলাইন ই-ট্রেকার সহ সকল রিপোর্ট প্রদান ও আসন্ন টিসিভি ক্যাম্পেইনের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম থেকে বিরত আছেন দেশের সকল স্বাস্থ্য সহকারীরা।
বক্তারা আরো বলেন আমরা কর্মসূচি পালনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে স্মারকলিপি ও আবেদনের মাধ্যমে আমাদের দাবি ও কর্মসূচি অবগত করেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত ও কতৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত আমাদের দাবী বাস্তবায়ন না হলে আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ইপিআই সহ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন থেকে স্বাস্থ্য সহকারীরা বিরত থাকবেন।
বক্তব্যে স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের প্রস্তাবিত ০৬ দফা দাবি সমূহ তুলে ধরেন- ১. নির্বাহী আদেশে নিয়োগবিধি সংশোধন শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (বিজ্ঞান) সংযুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান।
২ ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টেকনিক্যাল মর্যদা সহ বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরন।
৩.পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিতকরন।৪. পূর্বের নিয়োগবিধি অনুযায়ী নিয়োগ পেলেও সকল স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্নাতক পাস স্কেলে আত্মীকরণ করতে হবে।
৫.বেতন স্কেলে উন্নীতকরণের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকগন যত সংখ্যক টাইমস্কেল অথবা উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্ত বা প্রাপ্য হয়েছেন তা পরবর্তী পূনঃনির্ধারিত বেতন স্কেলের সাথে যোগ করতে হবে। ৬.পূর্বে ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ (এসআইটি) কোর্স সম্পূর্ণ কারী স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকদেরকে ডিপ্লোমাধারী সম্পন্ন হিসেবে গণ্যকরে সরাসরি ১১তম দিতে হবে।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই ০৬দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা আরোও শক্তিশালী ও টেকসই হবে।
দঘদিন ধরে চলমান বৈষম্য নিরসনের লক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তাবিত সুপারিশ সমূহের বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞাপনজারি এখন স্বাস্থ্য সহকারীদের সময়ের দাবী। প্রস্তাবিত ০৬দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত সকল কর্মসূচী চলমান থাকবে। স্বাস্থ্য সহকারীরা আশা করেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৈষম্যের শিকার দেশের ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারীদের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে তাদের প্রস্তাবিত ৬দফা দাবি বাস্তবায়ন করবেন।
অবস্থান কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলায় কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীবৃন্দ।
Leave a Reply